
গরুর মাংস নিয়ে অনেকের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে। যেহেতু গরুর মাংসে চর্বির পরিমাণ বেশি, তাই ভয়টাও বেশি। তবে চর্বি বাদ দিলে গরুর মাংস প্রচুর পুষ্টিসম্পন্ন একটি খাবার।
গরুর মাংসে আছে প্রচুর প্রোটিন, যা শরীরে মাংসপেশির বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, আছে ভিটামিন বি-১২, এটি রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। আরও আছে বি-৬, এটি মস্তিষ্ক ও নার্ভাস সিস্টেম সচল রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও আছে জিংক ও সেলেনিয়াম, এগুলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে, আয়রন ও পটাশিয়াম। এগুলো ছাড়া আরও কিছু ভিটামিন ও মিনারেল আছে গরুর মাংসে।
তবে গরুর মাংস খেতে হবে একটু সচেতন হয়ে। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে।
- আমাদের গরুর মাংসে চর্বি ফেলে দিতে হবে। ইউএসডিএর মতে, ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে ৯৫ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। গরুর মাংসের কম চর্বিযুক্ত মাংস এবং কাটার সময় চর্বি ফেলে দিয়ে কাটলে মাংসের মোট চর্বির পরিমাণ ১০০ গ্রাম মাংসে ১০ গ্রাম থেকে ৫ গ্রামে কমিয়ে আনা যায়। এমনকি সেচুরেটেড ফ্যাট ৪ দশমিক ৫ গ্রাম থেকে কমে ২ গ্রাম নেমে আসে। কিন্তু প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান বজায় থাকে। ১০০ গ্রাম গরুর মাংস অর্থাৎ মাঝারি আকারের ৩ টুকরো মাংসে প্রোটিন থাকে ২৬ গ্রাম।
- রান্নার আগে মাংস হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
- গরুর যে অংশের মাংসে চর্বি কম, তা বেছে নিতে হবে। টেন্ডারলয়েন, প্যালেট, রিব এগুলোতে চর্বি বেশি থাকে।
- এক দিনে ৮০ থেকে ৯০ গ্রাম মাংসের বেশি খাওয়া যাবে না।
- গরুর মাংসের সঙ্গে সালাদ ও সবজি যোগ করে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
- দুপুরের পর গরুর মাংস খাওয়া যাবে না।
- গরুর মাংস পেঁপে, বাঁধাকপি ইত্যাদি সবজি দিয়ে রান্না করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
- মাংস রান্নার সময় তেল ছাড়া বা কম তেলে রান্না করতে হবে। মাংসে যে তেল বা চর্বি থাকে, তা দিয়েই রান্না করতে হবে গরুর মাংস।
- মাংস খাওয়ার সময় ঝোল বা গ্রেভি এড়িয়ে চলতে হবে।
লেখক: ক্লিনিক্যাল ডায়টেশিয়ান অ্যান্ড নিউট্রিশন কনসালট্যান্ট, ইউ এস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।