তকদীর সিরিজের চেয়ে ভিন্ন কিছু বানাতে পেরেছি

37


‘নতুন কাজ কবে আসছে?’—প্রশ্নটা নিশ্চয়ই অনেকবার শুনতে হয়েছে?
হ্যাঁ। আসলে, কারাগারে সময় বেশি লেগেছে কারণ এর গল্পটা অনেক বড়। এক শর বেশি চরিত্র আছে। তাঁদের সংলাপগুলো একটার সঙ্গে আরেকটি মিশিয়ে লিখতে আমাদের অনেক সময় লেগেছে। আর এর অনেক পার্ট আছে। এখন মুক্তি পাবে পার্ট ওয়ান। পার্ট টুয়েরও শুটিং হয়েছে।

গল্পটা কী?
এটা মিস্ট্রি জনরার। এর মজাটা হচ্ছে এখানে প্রশ্ন থাকবে, উত্তরটা হচ্ছে পাজেলের মতো। খুঁজতে হবে। সেটা ফিল্মমেকারকেও খুঁজতে হবে। অডিয়েন্সেরও খুঁজতে হবে। কারাগার সিরিজের মূল গল্পের লেখক নেয়ামত উল্লাহ মাসুম। তকদীর সিরিজে আমার কো-রাইটার ছিলেন তিনি। 

দ্বিতীয় সিরিজেও চঞ্চলকে নেওয়া কেন?
চঞ্চল ভাইকে নেওয়ার প্রথম কারণ তাঁর অ্যাক্টিং স্কিল। একজন অভিনেতা চোখের ইশারায় কথা বলে একটা সিরিজ টেনে নিয়ে যাবে, সেটা খুবই টাফ। চঞ্চল ভাই থিয়েটার করা মানুষ। তাঁদের অভিনয়ের চর্চাটা দারুণ! তা ছাড়া, আমি যাঁদের সঙ্গে খুব কমফোর্টেবল থাকব, এমন মানুষদেরই কাজে নিতে চেয়েছি। আমি কারাগারের পুরো গল্পটা চঞ্চল ভাইকে কখনো বলিইনি। তাঁকে শুধু বলেছি, এই আপনার আইডেনটিটি। তিনিও বাকি কিছু শুনতে চাননি।

চঞ্চল চৌধুরীর নাকি ভয়ানক খাটুনি গেছে?
সিরিজের পুরোটা সময় চঞ্চল ভাইয়ের পরনে ছিল ঘর্মাক্ত একটি পোশাক। এমনও হয়েছে টানা ১৩-১৪ দিন এক পোশাকেই থাকতে হয়েছে। পোশাকটি ক্রমাগত ময়লা হতে থাকায় টানা শুট করে যাওয়াটাও একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। কারাগারের যে সেলগুলোয় শুটিং করা হয়েছে, সেগুলো খুবই অপরিচ্ছন্ন ছিল। পরে অসুস্থ হয়ে এক সপ্তাহ বিছানা থেকে উঠতে পারেননি চঞ্চল ভাই। 

বলছিলেন চঞ্চল চৌধুরী কমফোর্ট দিয়েছে। সেটা কেমন?
তাঁর লম্বা চুল ছিল। চরিত্রের জন্য কেটে ফেলতে হয়েছে। আমি বলেছিলাম উইগ লাগাই বা অন্য কোনোভাবে করি। চঞ্চল ভাই বলেছেন ‘তোমার চরিত্রটা বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য যদি ন্যাড়াও হতে হয়, আমি করতে চাচ্ছি।’ চুল ছোট করে ক্যাপ পরে ঘুরেছেন অনেক দিন। একজন অভিনেতা যদি চরিত্রের জন্য এমন ডেডিকেটেড থাকেন, তখন পরিচালকও বেস্টটা দিতে পারেন।

পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে শুটিং হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
কারাগারটি পুরোপুরি বন্ধ করে কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরিত করার পরেই এখানে শুটিং হয়। কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যে সাপোর্ট পেয়েছি, তাতে আমি কৃতজ্ঞ। তাঁরা যদি পজিটিভ না হতেন এই বিশাল টিম নিয়ে সেখানে শুটিং করা সম্ভব হতো না। প্রায় এক মাস সেখানে শুটিং হয়েছে। আমরা যখন শুটিং শেষ করে ফিরে আসছি, তাঁরা মন খারাপ করছিলেন। বলছিলেন, আবার আসবেন।

আফজাল হোসেন জল্লাদের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এমন একটা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তাঁকে কীভাবে রাজি করালেন?ফোনে প্রথম অফারটি দিয়েছিলাম। পুরো কাজের কথা তাঁকে জানালাম। এর পর বললাম, আপনার একটা পার্ট আছে। ‍আমি তাঁকে গল্পটা বলতে চাইলাম। তিনি বললেন, তোমার তকদীর আমার দারুণ লেগেছে। আমি জানি, তুমি খারাপ কিছু লেখোনি। বললাম, আপনি গল্পটা শোনেন। আপনি তো আমার মা-খালাদের ক্রাশ ছিলেন। আমার গল্পটায় কিন্তু আপনি তেমন না। তিনি বললেন, ইটস ওকে। তুমি বলেছ, আমি করব।

তকদীরে তুমুল প্রশংসা পেয়েছেন। ‘কারাগার’ যদি মানুষ পছন্দ না করে?
তকদীরে যে ভুলগুলো করেছি, চেষ্টা করেছি সেটা কারাগারে যেন না হয়। কারাগারে হয়তো নতুন ভুল করেছি।  সেই ভুল হয়তো সামনের প্রজেক্টে করব না। এভাবেই তো এগিয়ে যেতে হবে। আবার এটাও যে সাকসেসফুল হবেই, এমন ভেবে কাজ শুরু করিনি। আমি নতুনভাবে নতুন ধরনের একটা গল্প বলতে চেয়েছি। প্রচুর নেতিবাচক সমালোচনাও আসতে পারে। বাট ইটস ওকে। কারণ, আমি জানি তকদীর থেকে ভিন্ন কিছু বানাতে পেরেছি।

সিরিজের পুরোটা সময় চঞ্চল ভাইয়ের পরনে ছিল ঘর্মাক্ত একটি পোশাক। … কারাগারের যে সেলগুলোয় শুটিং করা হয়েছে, সেগুলো খুবই অপরিচ্ছন্ন ছিল। পরে অসুস্থ হয়ে এক সপ্তাহ বিছানা থেকে উঠতে পারেননি চঞ্চল ভাই। 





Source link