তাঁর যুদ্ধই আমাদের যুদ্ধ, রুশদির ওপর হামলার প্রতিক্রিয়ায় মাখোঁ

43


ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেছেন, ফ্রান্স সালমান রুশদির পাশে আছে। বার্তা সংস্থা এএফপি আজ শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

স্থানীয় সময় শুক্রবার নিউইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছুরিকাঘাতের শিকার হন বুকারজয়ী লেখক সালমান রুশদি। হামলার পরপরই তাঁকে হেলিকপ্টারে করে পেনসিলভানিয়ার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এরপর থেকে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। গতকাল শুক্রবার এক টুইটার পোস্টে ইমানুয়েল মাখোঁ লিখেছেন, ‘৩৩ বছর ধরে সালমান রুশদি স্বাধীনতার পক্ষে এবং সব অস্বচ্ছতা ও অস্পষ্টতার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। তাঁর এই যুদ্ধ আমাদের সবার যুদ্ধ। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন আরও বেশি নিবিড়ভাবে রুশদির পাশে আছে ফ্রান্স।’ 

এদিকে আজ এক বিবৃতিতে রুশদির এজেন্ট অ্যান্ড্রু উইলি বলেছেন, রুশদির অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তিনি এখন ভেন্টিলেটর সাপোর্টে (কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার প্রক্রিয়া) রয়েছেন। কথা বলতে পারছেন না। তিনি সম্ভবত একটি চোখও হারাতে পারেন। তাঁর বাহুর স্নায়ু বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং লিভারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, শিতৌকা ইনস্টিটিউশনের এক বক্তৃতা অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছিলেন সালমান রুশদি। ওই সময় তাঁকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন অনুষ্ঠানের উপস্থাপক। ঠিক তখনই এক ব্যক্তি বেশ কয়েকবারের বাধা উপেক্ষা করেই মঞ্চে উঠে যান এবং রুশদিকে ছুরিকাঘাত করেন। 

এই হামলার পর নিউজার্সির ফেয়ারভিউ থেকে হাদি মাতার নামে ২৪ বছর বয়সী একজন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে নিউইয়র্ক স্টেট পুলিশ। 

সালমান রুশদিকে তাঁর লেখার জন্য ইরানি নেতৃবৃন্দ হত্যার ঘোষণা দিয়েছে ১৯৮৯ সালে। অবশ্য ইরান পরে এই ঘোষণা তুলে নেয়। সে সময় ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা প্রয়াত আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি সালমান রুশদির চতুর্থ উপন্যাস ‘স্যাটানিক ভার্সেস’-এ ইসলামের বিরুদ্ধে অবমাননামূলক বিষয় রয়েছে উল্লেখ করে রুশদিকে হত্যা করার জন্য মুসলমানদের আহ্বান জানিয়ে ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি ফতোয়া জারি করেন। 

খ্যাতিমান এই লেখকের জন্ম ১৯৪৭ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে। ১৯৭৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি ১৪টি উপন্যাস লিখেছেন। বিশ্বসাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার বুকার পুরস্কারের জন্য তিনি পাঁচবার মনোনয়ন পেয়েছেন। রুশদি তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’-এর জন্য ১৯৮১ বুকার পুরস্কার অর্জন করেন। ইরান তাঁর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করার পর দীর্ঘ ৯ বছর আত্মগোপনে ছিলেন বিশ্বখ্যাত এই লেখক।





Source link